ঢাকা ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ফেনীতে উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে বখাটেদের উৎপাত 

ফেনীতে উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে বখাটেদের উৎপাত 

ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলির সামনে বেড়েছে বখাটেদের উৎপাত উদ্বেগজনক হারে।

এতে অনেক মেয়ে শিক্ষার্থীর বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধের উপক্রম হয়েছে। অনেকে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন।

প্রতিকার চেয়ে কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান ও অভিভাবকরা থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। কিন্তু পুলিশ অভিযোগ পেয়ে অনেককে আটক করে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দিয়েছেন। সর্বশেষ রোববার পুলিশ ছদ্মবেশে ঘুরে ১২ জনকে আটক করেছেন।

জানা গেছে, উপজেলায় ৩০টি মাধ্যমিক ও একটি সরকারিসহ ছয়টি কলেজ রয়েছে। এরমধ্যে উপজেলা শহরের প্রতিষ্ঠানসহ শুভপুর ইউনিয়নের

বল্লভপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও জয়পুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে কিশোর ও বখাটেদের আনাগোনা বেশি।

উচ্চ শব্দে বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালানোর অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

একাধিক অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, শিক্ষার্থী ছাড়াও বখাটেদের কাছে অভিভাবক, শিক্ষক ও কমিটির সদস্যরা অসহায়। থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। প্রতিকার না পেলে সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাবেন না। অনেকে পরিস্থিতি বুঝে সন্তানকে বিদ্যালয়ে পাঠাচ্ছেন।

অপরাধীদের অনেকে রাজনৈতিক নেতা ও এলাকার বড় ভাইয়ের ছত্রছায়ায় থাকায় বেপরোয়া আচরণ করছে। বাঁশপাড়া আইডিয়াল বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা জানান কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাতে ছাত্রীরা অসহায়। ছাত্ররা প্রতিবাদ করলে বা তাদের বিদ্যালয়ের সামনে থেকে চলে যেতে বললে তারা হুমকি দেয়। এ জন্য জোরালো প্রতিবাদের সাহস পায় না ছাত্ররা। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফরিদুর রহমান মিলন বলেন, বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে শিক্ষার্থীদের উত্ত্যক্ত করে বখাটে ও কিশোররা। তাদের থামাতে ব্যর্থ হওয়ায় কয়েকজন অভিভাবক থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।

চাঁদগাজী স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ তাহেরা বেগম বলেন, তাঁর প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী বেশি হওয়ায় বখাটের উৎপাতও বেশি। নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় থানায় বার বার অভিযোগ দিতে হয়েছে। পুলিশ এলে তারা পালিয়ে যায়। কয়েকজনকে থানায়ও নিয়েছে।

বখাটেদের উৎপাতে চাঁদগাজী স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষার্থী প্রতিষ্ঠানে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল বলে পরিচালনা কমিটির এক সদস্য জানান। পরে দুই শিক্ষার্থীর বাড়িতে গেলে অভিভাবকরা কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

স্থানীয় মহামায়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য জমির উদ্দিন বাবু জানান, তাঁর ওয়ার্ডের কয়েকজন শিক্ষার্থী যৌন হয়রানির শিকার হয়ে কিছুদিন স্কুলে যায়নি।

এ বিষয়ে পৌর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর হোসেন বলেন, দলের পড়ুয়াদের বাজে আড্ডা দিতে নিষেধ করা হয়েছে। কোনো কর্মী অনিয়মে সঙ্গে জড়িত নয়।

উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মুন্সি মোর্শেদ আলমের ভাষ্য, বখাটেদের কোনো দল নেই। ছাত্রলীগ আদর্শিক রাজনীতি করে। শিক্ষার্থীদের যারা উত্ত্যক্ত করে,তাদের সঙ্গে সংগঠনের কোনো সম্পর্ক নেই।

ছাগলনাইয়া থানার অফিসার ইনচার্জ সুদীপ রায় পলাশ বলেন, বেশ কিছু বখাটেকে ধরে অভিভাবক ডেকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। রোববারও কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে ছেড়ে দেওয়াদের কেউ থাকলে আদালতে পাঠানো হবে। কয়েকজন অভিভাবক ও প্রতিষ্ঠান প্রধান লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ দিয়েছেন। উপপরিদর্শককে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে দায়িত্ব পালনে পাঠালে তাঁদের অবহেলার অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। বিষয়টি পুলিশ সুপার জাকির হাসানকে জানিয়েছেন।

ফেনী
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত